কিভাবে এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখতে হয়?

 

আর্টিকেল এসইও ফ্রেন্ডলি না হলে তা গুগলে র‍্যাংক করবে না। তাই নতুন ব্লগারদের জন্য অবশ্যই কিভাবে এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখতে হয় তা জানা উচিত।

কিভাবে এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখতে হয়?

এই আর্টিকেলে আমরা On-page এসইওর মৌলিক এলিমেন্টগুলো স্টেপ বাই স্টেপ দেখাবো। ফলে আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আলোচনার পরামর্শগুলো অনুসরণ করেন, তাহলে আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে আপনাকে আর কোন জটিলতার সম্মুখিন হতে হবে। তাহলে চলুন, শুরু করি।

১. সার্চ ভ্যালু আছে এমন টপিক নিন

আপনি যে বিষয়ের ওপর আর্টিকেল লিখতে চাচ্ছেন তারা পর্যাপ্ত সার্চ ভ্যালু (Search Value) আছে তো? অবশ্যই আপনার লেখা টপিকের সার্চ ভ্যালু থাকতে হবে। সার্চ ভ্যালু বলতে উক্ত বিষয় জানতে মানুষ কতটা আগ্রহী তাকে বোঝায়। আপনার লেখা টপিকটি জানতে মানুষ যদি গুগলে নিয়মিত সার্চ করে, তবেই আপনার টপিকের সার্চ ভ্যালু তৈরি হয়।

অপরদিকে আপনি এমন একটি টপিক নিয়ে আর্টিকেল লিখলেন, যা সম্পর্কে মানুষের জানার কোন আগ্রহ নেই; এতে আপার লেখার কোন মূল্য থাকবে না। মানুষের জানার আগ্রহ নেই, অর্থাৎ তারা এ বিষয়ে গুগলে সার্চ করবে না। ফলে আপনার লেখাও কেউ পড়বে না। এতে করে আপনার সময় অপচয় হবে।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, প্রযুক্তি ইত‌্যাদির প্রতি মানুষের আকর্ষণ রয়েছে। ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন এসব বিষয়ে জানতে গুগলে সার্চ করেন।

তাই মানুষ জানতে আগ্রহী এমন টপিক বেছে নিন। এ বিষয়গুলো হতে পারে শিক্ষা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য বা ভ্রমণ। যাই হোক না কেন, আর্টিকেল লেখার পূর্বে উক্ত টপিক নিয়ে রিসার্চ করুন এবং মানুষের জানার চাহিদা অনুধাবন করুন।

২. Focus keyword বেছে নিন

কোন টপিকের ওপর আর্টিকেল লিখবেন, তা ভাবা শেষ হলে মনযোগ দিন Focus keyword এর ওপর। Focus keyword হচ্ছে আপনি যে টপিকে আর্টিকেল লিখতে যাচ্ছেন, তার মধ্যে থেকে এমন একটি ছোট বাক্য, যা লিখে মানুষ গুগলে সার্চ করে। মূলত Focus keyword এর ওপরই একটি আর্টিকেল গড়ে ওঠে।

যেমন ধরুন, আমরা আজকে এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার নিয়মের ওপর আলোকপাত করেছি। তাই আজকে আমাদের Focus keyword হচ্ছে “কিভাবে এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখতে হয়”। কোটেশন মার্কের মধ‌্যে দেওয়া কিওয়ার্ডটি গুগলে সার্চের মাধ্যমে অনেক মানুষ এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল সম্পর্কে জানতে চাইবে। তাই আমরা ইউজারদের সার্চ করা সম্ভাব্য কিওয়ার্ডটিকে Focus keyword হিসেবে বেছে নিয়েছি।

একটি আর্টিকেলকে দ্রুত সার্চ ইঞ্জিনে শীর্ষে নিয়ে আসতে Focus keyword এর গুরুত্ব অনেক। গুগলসহ শীর্ষস্থানীয় সকল সার্চ ইঞ্জিন ফোকাস কিওয়ার্ডের ভিত্তিতে আর্টিকেলকে উপরে নিয়ে আসে।

৩. Focus keyword যথাযথ ব্যবহার করুন

আপনার আর্টিকেলের Focus keyword কি তা খুঁজে বের করে সেটিকে আর্টিকেলের বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করতে হবে। আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য (Length) অনুযায়ি Focus keyword বেশ কয়েকবার ব্যবহার করা হয়। যেমন-

  • আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য ১০০০ ওয়ার্ডের হলে:
  • মূল টাইটেলে ১ বার
  • প্রথম ১৫০ ওয়ার্ডের মধ্যে ২ বার
  • সাব-হেডিং (h2, h3, h4) এ অন্তত ১ বার
  • মূল আলোচনার যেকােন স্থানে ১ বার
  • শেষ ১৫০ ওয়ার্ডের মধ্যে ১ বার
লক্ষণীয়: Focus keyword ইউনিক একটি বাক্যাংশ বা Phrase. এই কিওয়ার্ডের মধ্যে অন‌্য কোন ওয়ার্ড যেন না প্রবেশ করে সেদিকে যথাসম্ভব খেয়াল রাখতে হবে।

আপনি যখন Focus keyword টি উপরের নির্দেশনা অনুযায়ি আপনার আর্টিকেলের বিভিন্ন স্থানে ব‌্যবহার করবেন, তখন গুগল আপনার লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বুঝতে পারবে এবং ইউজার সার্চ করা মাত্রই সার্চ লিস্টে আপনার লেখা চলে আসবে।

সাধারণত একটি ৬০০ ওয়ার্ডের আর্টিকেলে সর্বোচ্চ ৩ বার, ১০০০ ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ ৫ বার এবং ২০০০ ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ ৮ বার ফোকাস কিওয়ার্ড ব‌্যবহার করা উত্তম। আর্টিকেলে ফোকাস কিওয়ার্ড অতিমাত্রায় ব্যবহার করলে এটি Over optimized হয়ে যাবে। যা একটি মানসম্মত আর্টিকেলের বৈশিষ্ট্য নয়।

৪. সাব-হেডিং ব্যবহার করুন

আর্টিকেল অনেকটা বইতে পড়া প্রবন্ধ রচনার মত। সেখানে যেমন আমরা রচনার বিভিন্ন অংশ যেমন- ভূমিকা, বিষয়বস্তু, উপসংহার ইত্যাদি পড়ে থাকি; আর্টিকেলেও এমন বিভিন্ন অংশ রয়েছে। আর অংশগুলো তৈরি হয় আপনি কোন বিষয়টিকে লক্ষ্য করে লিখছেন তার ওপর।

আর্টিকেলের মধ্যে প্রয়োজনীয় সাব-হেডিং ব্যবহার করলে তা গুগলের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হয়। ফলে আর্টিকেল দ্রুত Rank করে।

আর্টিকেলের প্রতিটি আলাদা আলাদা অংশ সাব-হেডিং (h2, h3, h4) ট্যাগ ব্যবহারের মাধ্যমে তুলে ধরুন। যেমন আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে ১, ২, ৩ সিরিয়াল দিয়ে মোট ৭টি এবং অতিরিক্ত আরো ২টি সাব-হেডিং ব্যবহার করেছি। যার মধ্যে প্রথম হেডিংটিতে আমরা Focus keyword ব্যবহার করেছি।

৫. Internal link ব্যবহার করুন

আপনার আর্টিকেলে কমপক্ষে হলেও একটি Internal link ব্যবহার করা জরুরি। Internal link বলতে নিজের ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ অন্য কোন পেজের লিংক যুক্ত করাকে বোঝায়। আপনি যখন কোন আর্টিকেল লিখবেন, তখন উক্ত আর্টিকেলের সাথে সম্পর্কিত অন্য কোন লেখা যদি আপনার ওয়েবসাইটে আগেই থাকে, তাহলে সেটিকে লিংকিং করে দিন।

এর ফলে আপানার আর্টিকেলটি On-page এসইওর আরেকটি ধাপ অতিক্রম করলো। Internal link ব্যবহার করলে আর্টিকেলের স্ট্রাকচার মানসম্মত হয়। একই সাথে ওয়েবসাইটে থাকা প্রাসঙ্গিক অন্যান্য পোস্টগুলোও পাঠকের সামনে তুলে ধরা যায়। ফলে একজন পাঠক একটি বিষয় পড়তে এসে তার সাথে প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়গুলোও চোখের সামনেই পেয়ে যায়।

৬. External link ব্যবহার করুন

External link কে অনেক সময় Outbound link ও বলা হয়। এটি Internal link এর সম্পূর্ণ বিপরীত। অর্থাৎ External link ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে বাইরে অন্য কোন ওয়েবপেজের সাথে আর্টিকেলকে লিংকড করা হয়।

যেমন- আপনি আপনার আর্টিকেল লেখার জন্য কিছু তথ্য অন্য কোন একটি ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করলেন। আপনি চাইলে উক্ত ওয়েবসাইটের লিংক আপনার আর্টিকেলে যুক্ত করতে পারেন। আপনি আর্টিকেলের যে অংশে অন্য ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহার করেছেন, সেখানে External link ব্যবহার করা সবচেয়ে উত্তম।

আবার অনেকেই আর্টিকেলের জন্য প্রয়োজনীয় ছবি বা ফিচার ইমেজ ডিজাইন করতে পারি না। তখন আমরা ফটো শেয়ারিং বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে বিনামূল্যে ছবি ডাউনলোড করে ওয়েবসাইটে ব্যবহার করি। এক্ষেত্রে আপনি যে সাইট থেকে ছবিটি সংগ্রহ করলেন, সেটির লিংক আর্টিকেলের শেষে ক্রেডিট হিসেবে দিতে পারেন।

অনেকেই নিজ ওয়েবসাইটের বাইরে অন্য কোন ওয়েবসাইটকে রেফার করে থাকেন। তখন প্রয়োজন অনুযায়ি লেখার যেকোন স্থানে External link ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে যেখানেই ব্যবহার করুন না কেন, সেটি যেন অবশ্যই যৌক্তিক হয়।

৭. প্রয়োজনীয় ইমেজ ব্যবহার করুন

আপনার লেখার মধ্যে প্রাসঙ্গিক এবং প্রয়োজনীয় ইমেজ বা ছবি ব্যবহার করা উচিত। আপনি কোন একটি বিষয় পাঠককে বোঝাচ্ছেন, প্রয়োজনবোধ করলে একটি ইমেজও লেখার মধ্যে জুড়ে দিন। অনেকেই শুধু ফিচার ইমেজেই ছবি ব্যবহার করেন, আর্টিকেলের অন্য কোন অংশে ইমেজ ব্যবহার করেন না।

যদিও আর্টিকেলের মধ্যে ইমেজ ব্যবহার করা বাধ‌্যতামূলক নয়, তবে এসইওর ক্ষেত্রে প্রয়োজন মাফিক ইমেজ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে। তবে প্রয়োজন নেই এমন জায়গায় অতিরিক্ত ইমেজ ব্যবহার না করাই ভালো্ কেননা, আর্টিকেলের মধ্যে অযথা ইমেজ ব্যবহার করলে আপানার ওয়েবসাইট খুব ধীরগতিতে লোড হবে। যা পাঠকের কাছে অস্বস্তির সৃষ্টি করবে।

শেষ কথা

দীর্ঘ এই নিবন্ধে আমরা আপনাকে কিভাবে এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখতে হয় তা বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি উপরোক্ত আলোচনা আপনার জন্য কার্যকরী এবং ফলপ্রসূ হবে। আমরা আরো আশা করছি এরপর থেকে কোর্সটিকায় গেস্ট পোস্ট লেখার ক্ষেত্রে আপনার আর কোন আর্টিকেলই রিজেক্টই হবে না। আপনার জন্য শুভকামনা

Post a Comment

0 Comments